সাধারণত আমরা জানি যে, একটি মামলায় যে যা দাবি করে থাকে, সেটা তাকেই প্রমাণ করতে হয়। সেই হিসেবে ফৌজদারি মামলায় আমরা দেখে থাকি, বাদী বা রাষ্ট্রপক্ষ যে অভিযোগ আনয়ন করেন, সেটা তাদেরকেই প্রমাণ করতে হয়।
বাদী বা রাষ্ট্রপক্ষ যখন কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারি অভিযোগ আনেন, সেক্ষেত্রে ওই অপরাধটি যে আসামিপক্ষ করেছে সেটি প্রমাণ করার দায়িত্ব শুধুমাত্র রাষ্ট্র বা বাদী পক্ষের ওপরই থাকে। আমাদের লিগ্যাল সিস্টেম বা আইন ব্যবস্থায় ধরে নেওয়া হয়ে থাকে, অপরাধ প্রমাণ হওয়ার আগ পর্যন্ত আসামি নির্দোষ। কমন ল লিগ্যাল সিস্টেম যত দেশে রয়েছে প্রায় সব দেশেই একই নিয়ম।
মুসলিম উদ্দিন বনাম রাষ্ট্র ৩৮ ডিএলআর (এডি) ৩২৭ মামলায় বলা হয়েছে, ফৌজদারি বিচারের মৌলিক নীতিটি হচ্ছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিরপরাধ বলে অনুমান করা এবং সে যে নিরপরাধ তা প্রমাণ করতে সাক্ষ্য উপস্থাপন করার কোনও বাধ্যবাধকতা অভিযুক্ত ব্যক্তির নেই। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব রাষ্ট্রপক্ষের উপর বর্তায় এবং যতক্ষণ পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষ তাকে অপরাধী হিসেবে প্রমাণ করতে পারছে না, ততক্ষণ পর্যন্ত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নির্দোষ হিসেবে ধরে নিতে হবে।
এজন্য দেখা গেছে, একজন ব্যক্তিকে অপরাধী বা আসামি বলে অভিযোগ করলেই তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, যে ব্যক্তি অভিযোগ করবে, তাকেই তা প্রমাণ করতে হবে। এ বিষয়টি অনেকেই হয়তো সহজ ভাবে বুঝতে না ও পারেন। অনেকেরই হয়ত দাবি থাকবে, চোর প্রমাণ করবে যে সে চুরি করেনি বা খুনি প্রমাণ করবে যে সে খুন করেনি। কিন্তু বিষয়টি যদি তেমন হয় সেক্ষেত্রে মানুষ ধরে ধরে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে নির্দোষ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অযথা অভিযোগ দায়ের করবেন আর নির্দোষ ব্যক্তিরা সেই অপরাধ গুলো থেকে নিজেদেরকে নির্দোষ প্রমাণ করতে করতেই জীবন পার করে দিবেন। এই কারণেই, অভিযোগ আনয়নকারী পক্ষের উপরই দায়িত্ব বর্তায় যে, সে তার দাবির সপক্ষে যুক্তি প্রমাণ উপস্থাপন করবেন। তবে হ্যাঁ, আসামি যদি আইনের কোনও সুবিধা নিতে চাই এবং সে ক্ষেত্রে তার কোন ব্যতিক্রম দাবি থেকে থাকে, তাহলে সেই দাবি তাকে প্রমাণ করতে হবে। যেমন আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য যদি সে অপরাধ করে থাকে সেক্ষেত্রে সে যে আত্মপক্ষ সমর্থন করার জন্য অপরাধটি করেছে, সেটি আসামি পক্ষকেই প্রমাণ করতে হবে। অন্যথায়, ফৌজদারি মামলায় প্রমানের দায়িত্ব সর্বদা বাদী বা রাষ্ট্র পক্ষের উপর বর্তায়।
অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্তি নৈর্ব্যক্তিক (এম সি কিউ) পরীক্ষা-২০২৩ এ এই জায়গা থেকে ধারা টেকনিক্যাল প্রশ্ন আসতে পারে, তাই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তে হবে। উল্লেখ্য, অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্তি নৈর্ব্যক্তিক (এম সি কিউ) পরীক্ষা-২০২৩ এর প্রস্তুতির জন্য নিয়মিত এমসিকিউ প্র্যাকটিস করার জন্য আপনাকে লিগ্যাল ফিস্টের এক্সাম অ্যাপটি ইন্সটল করতে হবে, যাতে আপনি ফ্রি এবং প্রিমিয়াম উভয় ভার্সনে ১০,০০০ এরও বেশি MCQ চর্চা করতে পারবেন।