সাধারণত আমরা দেখেছি যে, ফৌজদারি মামলায় বাদী বা রাষ্ট্রপক্ষকে তাদের আনীত অভিযোগগুলো প্রমাণ করতে হয়; আসামিপক্ষকে কোন কিছু প্রমাণ করার প্রয়োজন হয় না। একজন ব্যক্তিকে চোর, ডাকাত, খুনি, ধর্ষণকারী ইত্যাদি যে অভিযোগই আপনি করেন না কেন, সেটি আপনাকেই প্রমাণ করতে হবে।
ফৌজদারি মামলার মৌলিক নীতি অনুসারে, একজন ব্যক্তি যতক্ষণ পর্যন্ত দোষী প্রমাণিত হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে নির্দোষ হিসেবে ধরে নিতে হবে। যার ফলে নির্দোষ ব্যক্তিকে এটা প্রমাণ করতে হবে না যে, সে নির্দোষ। বরং, নির্দোষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন, তা তাকেই প্রমাণ করতে হবে যে, ওই নির্দোষ ব্যক্তি অপরাধী। যার ফলে বাদী বা রাষ্ট্রপক্ষকে প্রমাণ করতে হয় যে, আসামিপক্ষ অপরাধী। অন্যদিকে, আসামিপক্ষকে কোনও কিছুই প্রমাণ করতে হয় না।
কিন্তু কখনও কখনও আসামিপক্ষকেও প্রমাণ করার প্রয়োজন হতে পারে বা প্রমাণের দায়ভার আসামি পক্ষের উপর বর্তায়।
কখন আসামিপক্ষের ওপর প্রমাণ করার দায়িত্ব বর্তায়?
যখন আসামিপক্ষ কোনো বিষয় দাবি করে যে, এটি একান্তই তার জানার বিষয়, সেক্ষেত্রে সেটি তাকে প্রমাণ করতে হবে। যেমন, সাধারণত স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কেউ একজন খুন হলে, অপরজনের দিকে সর্বপ্রথম সন্দেহ যায় বলেই তাকে ব্যাখ্যা করতে হয় কিভাবে খুন হয়েছে। এক্ষেত্রে সে যে নির্দোষ সেটি একরকম তাকেই প্রমাণ করতে হয়।
তাছাড়া আপনি কোন অপরাধ করেছেন আত্মপক্ষ সমর্থন করার জন্য, সেক্ষেত্রে আপনি যে আত্মপক্ষ সমর্থন করার জন্য এটি করছেন, সেক্ষেত্রে সেটাই আপনাকে প্রমাণ করতে এবং ঐ মুহুর্তে আপনার আত্মপক্ষ সমর্থন করার প্রয়োজনীয়তা ছিল কি না ইত্যাদি আপনাকে প্রমাণ করতে হবে।
সাক্ষ্য আইন ১৮৭২ এর ১০৫ এবং ১০৬ ধারায় এই বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে। সাক্ষ্য আইনের ১০৫ ধারায় বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি যখন কোন ব্যতিক্রম দাবি করে, তখন তার কার্যটি দণ্ডবিধিতে উল্লিখিত কোন সাধারণ ব্যতিক্রম বা বিশেষ ব্যতিক্রমের মধ্যে পড়লে, সেক্ষেত্রে উক্ত ব্যতিক্রম প্রমাণ করার দায়িত্ব হচ্ছে অভিযুক্ত ব্যক্তির।
একইভাবে, সাক্ষ্য আইনের ১০৬ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোন বিষয় যখন বিশেষ ভাবে কোনো ব্যক্তির অবগতির মধ্যে থাকে, তখন সেই বিষয়টি প্রমাণ করার দায়িত্ব তার উপরেই বর্তাবে। ১০৬ ধারাতেই মূলত, স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী বা স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রীকে অভিযুক্ত করলে সেক্ষেত্রে তারা খুনের ব্যাখ্যা দেওয়ার মাধ্যমে নিজেদেরকে সন্দেহের আড়ালে ছলে নির্দোষ প্রমাণ করবে। অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্তি নৈর্ব্যক্তিক (এম সি কিউ) পরীক্ষা-২০২৩ এ এই জায়গা থেকে ধারা বা টেকনিক্যাল প্রশ্ন আসতে পারে, তাই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তে হবে।
উল্লেখ্য, অ্যাডভোকেট তালিকাভুক্তি নৈর্ব্যক্তিক (এম সি কিউ) পরীক্ষা-২০২৩ এর প্রস্তুতির জন্য নিয়মিত এমসিকিউ প্র্যাকটিস করার জন্য আপনাকে লিগ্যাল ফিস্টের এক্সাম অ্যাপটি ইন্সটল করতে হবে, যাতে আপনি ফ্রি এবং প্রিমিয়াম উভয় ভার্সনে ১০,০০০ এরও বেশি MCQ চর্চা করতে পারবেন।